দৈনিক সহযাত্রী

শিরোনাম

দেশে রিজার্ভ নেমে এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলারে

সহযাত্রী অনলাইন ডেস্কঃ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরো কমে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে। রেকর্ড আমদানি দায় ও বিদেশী ঋণ পরিশোধের জন্য প্রায় প্রতিদিনই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। মঙ্গলবার এর পরিমাণ ছিল ৩৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে অর্থাৎ গত বছরের ১৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করার কারণে গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে আমদানি ব্যয় প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৬৯ কোটি (১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন) ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রফতানি আয় ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলারে। একই সময়ে প্রবাসী আয় মাত্র ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬৭ কোটি ডলার। প্রথম দুই মাসে রফতানি ও রেমিট্যান্স বাড়লেও সেপ্টেম্বরে কমেছে।

চলতি মাসেও দেশের রেমিট্যান্স-প্রবাহে ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। মাসের প্রথম ১৩ দিনে (১ থেকে ১৩ অক্টোবর) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৭ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় অংকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, গত অর্থবছরে রেকর্ড ৮৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলে দেশের ব্যাংগুলো। ইতিহাসের সর্বোচ্চ এ এলসি দায় পরিশোধের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে ব্যাংকগুলো বর্তমানে দিশেহারা পরিস্থিতি পার করছে। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে তীব্র ডলার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক চাইলেও যথাসময়ে এলসি দায় পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার বিদেশী ঋণের কিস্তির ডলার সংস্থান করতে পারছে না কিছু ব্যাংক। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত বাজারে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করেছে প্রায় ৭৫০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪৫ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অব্যাহতভাবে ডলার বিক্রি করায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। যদিও গত বছরের আগস্টে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতার কারণে গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার প্রায় ২৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে দেশে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত প্রতি ডলারের দর ছিল ১০৫ টাকা। যদিও দেশের খুচরা বাজারে এ দরে ডলার মিলছে না। কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলারের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১৫ টাকারও বেশি। স্বল্প সময়ে টাকার অস্বাভাবিক এ অবমূল্যায়নের ফলে বিদেশী উৎস থেকে ডলারে ঋণ নেয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণও প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter