আগামীকাল ২৬ জুন বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার অনুরোধ জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৫ জুন) অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অনুরোধ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২২ জুন থেকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আবারও আন্দোলন শুরু হলে অর্থ উপদেষ্টা আগামী ২৬ জুন বিকেল ৫টায় উল্লিখিত দুই ক্যাডারের প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার আশা করে, এই আলোচনার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ৩১ জুলাই জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা সম্ভব হবে। এ কারণেই অর্থ উপদেষ্টা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দপ্তরে থেকে চলমান অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসগুলোতে রাজস্ব আহরণে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দেশের সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী সংগঠন, অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীরা রাজস্ব কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজ পৃথক করার সুপারিশ করে আসছেন। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর এনবিআর সংস্কার বিষয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করে।
উক্ত কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কার্যক্রম পৃথক করার নীতিগত অনুমোদন দেয়। এরপর বিসিএস (কর) ও (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের এসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়া তৈরি করে মার্চ মাসে এনবিআর চেয়ারম্যানের নিকট জমা দেন। সংশোধিত খসড়া অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে ১২ মে জারি করা হয়।
তবে অধ্যাদেশ জারির পর এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর বাতিল দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের সঙ্গে ঘন্টাব্যাপী এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, রাজস্ব সংস্কার কমিটিসহ সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
তবুও আন্দোলন চলতে থাকায় ২৫ মে অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয় যে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংশোধনী আনা হবে। এতে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। কিন্তু বর্তমানে আবারও ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হওয়ায় উপদেষ্টা আবার আলোচনার আহ্বান জানান।
এদিকে, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও ‘নিপীড়নমূলক’ বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআরের সকল পর্যায়ের অফিসে আজও চলছে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৫ ও ২৬ জুন প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকায় রাজস্ব ভবনে অবস্থান ও কলম বিরতি পালন করবেন। ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক দপ্তরগুলোতেও একই কর্মসূচি পালিত হবে।
 
                 
                                                                                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                