ইরান–ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে আমেরিকা। তিনজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনী মধ্যপ্রাচ্যে আরও বেশি সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। একই সঙ্গে এই অঞ্চলে সেনা সদস্যের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
একজন সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন, এই যুদ্ধবিমানগুলো এফ–১৬, এফ–২২ এবং এফ–৩৫ মডেলের।
দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিমানগুলো মূলত মিসাইল এবং ড্রোন ধ্বংস করার মতো প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার হবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে জানিয়েছেন, ইরানের আকাশ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে ইরানের আকাশ আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে নাকি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে–তা স্পষ্ট করে জানাননি ট্রাম্প।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন বলা হয়, এমন এক সময় ট্রাম্প এই মন্তব্য করলেন, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত চরমে। ইরানের পরমাণু কার্যক্রম ধ্বংস করতে আমেরিকার কাছে সহায়তা চেয়েছে ইসরায়েল।
ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘ইরানের কাছে আকাশসীমা তদারকি করার ভালো ট্র্যাকার এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ছিল। এবং এসব ছিল প্রচুর পরিমাণে। কিন্তু আমেরিকার তৈরি এ সংক্রান্ত সরঞ্জামের সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এ সংক্রান্ত ভালো পুরাতন জিনিসপত্র আমেরিকার চেয়ে ভালো আর কেউ দিতে পারবে না।’
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে আমেরিকা যুক্ত নয় বলে বারবার বলে আসছেন ট্রাম্প। কিন্তু এবার এমন এক মন্তব্য করলেন, যাতে স্পষ্ট হয় যে–আমেরিকা এই সংঘাতে সরাসরি জড়িত। তবে পোস্টে বিস্তারিত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি তিনি।
এরপর তিনি আরও একটি পোস্ট করেন ট্রুথ সোশ্যালে। সেখানে লেখেন, ‘আমরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে (আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি) মারব না। অন্তত এই মুহূর্তে না। তবে আমরা জানি তিনি কোথায় লুকিয়ে আছেন।’
ট্রাম্প লেখেন, ‘তিনি সহজ লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু সেখানে তিনি নিরাপদ। আমরা তাকে বের করে (হত্যা!) করব না, অন্তত এই মুহূর্তে নয়। কিন্তু আমরা বেসামরিক নাগরিক বা আমেরিকান সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে দিতে চাই না। আমাদের ধৈর্যের বাধ ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে।’
গত শুক্রবার ইরানে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। এরপর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। এরপর থেকে দুই দেশের হামলা-পাল্টা হামলা চলছেই।
ইরানের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট (এইচআরএএনএ) জানায়, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ইরানে ৪৫০ প্রাণহানি হয়েছে। এরমধ্যে বেসামরিক মানুষের সংখ্যা ২২৪। আর সামরিক বাহিনীর সদস্য ১০৯ জন।
অন্যদিকে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে ইরানের হামলায় গুরুতর আহত ১৫৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ২৪ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
 
                 
                                                                                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                