শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন: কী এই কার্গো ভিলেজ ও সেখানে কী থাকে

সহযাত্রী ডেস্কঃ
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সে শনিবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাময়িকভাবে উড়োজাহাজের ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সে শনিবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাময়িকভাবে উড়োজাহাজের ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সে শনিবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাময়িকভাবে উড়োজাহাজের ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২০টির বেশি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে বিকেল পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভেনি।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এক কর্মকর্তা জানান, আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শত শত টন আমদানিকৃত পণ্য পুড়ে গেছে। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।

আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল বলেন, “এই আগুনে অনেক আমদানিকারক বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য পুড়েছে, তা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরই বোঝা যাবে।”

কার্গো ভিলেজ কী

কার্গো ভিলেজ হলো বিমানবন্দরের সেই এলাকা, যেখানে আকাশপথে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ, এখানেই পণ্য শুল্কায়ন, সংরক্ষণ ও খালাসের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়।

প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীর পাশাপাশি পণ্য পরিবহনও হয়। যাত্রীরা টার্মিনাল ব্যবহার করলেও পণ্য পরিবহনের জন্য থাকে আলাদা স্থান — যাকে বলা হয় কার্গো ভিলেজ বা কার্গো কমপ্লেক্স।

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি কার্গো ভিলেজ রয়েছে — একটি আমদানির জন্য, অন্যটি রপ্তানির জন্য। শনিবারের আগুন লাগে আমদানি কমপ্লেক্সে।

কার্গো ভিলেজে সাধারণত পণ্য রাখার গুদাম, শুল্ক বিভাগ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিমান সংস্থা, এবং বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস থাকে। এখানেই পণ্যের কাগজপত্র যাচাই, শুল্কায়ন, ও চালান হস্তান্তর করা হয়।

পচনশীল পণ্য যেমন শাকসবজি, ফলমূল সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এখান থেকে খালাস বা প্রেরণ করা হয়। অন্যদিকে তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস, ও অন্যান্য পণ্য কখনো কখনো কার্গো বিমানের জায়গা সংকটের কারণে কয়েক দিন পর্যন্ত এখানেই সংরক্ষিত থাকে।

অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনায় বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমন ভয়াবহ আগুন লাগা এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগা উদ্বেগজনক। এতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা শ্রেণিতে অবনতি ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আগুনের উৎস ও ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডে দেশের আমদানি কার্যক্রমে বড় ধাক্কা লাগতে পারে।

এলাকার খবর

সম্পর্কিত