হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে এই আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৬টি ইউনিট। পাশাপাশি সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও সহায়তা করছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বেলা ২টা ১৫ মিনিটে কার্গো ভিলেজের কুরিয়ার গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর বিকাল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ইলেকট্রনিক্স গোডাউনে। প্রায় বিশ মিনিটের ব্যবধানে আগুন পৌঁছে যায় কেমিক্যাল গোডাউনে, যেখানে দাহ্য পদার্থ থাকায় অগ্নিকাণ্ডটি প্রলয়ঙ্করী রূপ নেয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা কার্গো ভিলেজে এবং কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশের আকাশ।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) জনসংযোগ কর্মকর্তা কাওসার মাহমুদ জানান, আগুনের কারণে বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠানামা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
এর ফলে ঢাকাগামী একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিকল্প রুটে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কলকাতায় অবতরণ করেছে কয়েকটি ফ্লাইট। এর মধ্যে ব্যাংকক থেকে আসা ইউএস–বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে নেমেছে, দিল্লি থেকে আসা ইন্ডিগো ফ্লাইট অবতরণ করেছে কলকাতায় এবং শারজাহ থেকে আসা এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটটিও চট্টগ্রামে নেমেছে।
অন্যদিকে, কুয়ালালামপুরগামী বাটিক এয়ারের ওডি–১৬৩ এবং মুম্বাইগামী ইন্ডিগোর ৬ই–১১১৬ ফ্লাইট ট্যাক্সিওয়েতে অপেক্ষা করছে। হংকং থেকে ঢাকাগামী ক্যাথে প্যাসিফিকের CPA049 ফ্লাইটটি শাহজালালে অবতরণ করতে না পেরে চট্টগ্রামের আকাশে চক্কর দিচ্ছে।
এছাড়া, সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। একইভাবে ইউএস–বাংলার চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের পর পুনরায় চট্টগ্রামেই ফিরে যায়।
বেলা ৩টা ৩১ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি–৩৪০ নম্বর ফ্লাইটটি ৩৯৬ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ।
এদিকে, শাহজালালে অবস্থানরত বিমানগুলোকে আগুনের স্থান থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুনের উৎস এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হতে কিছুটা সময় লাগবে।