দৈনিক সহযাত্রী

হুংকারে গরম, কর্মসূচিতে নরম ইসলামী আন্দোলন

সহযাত্রী রাজনীতি ডেস্ক: এদিকে সভা-সমাবেশে সরকারের প্রতি হুংকার দিলেও রাজপথে সে রকম কোনো অবস্থান দেখা যাচ্ছে না ইসলামী আন্দোলনের। নির্দিষ্ট কিছু দাবিতে মাঝে মধ্যে কর্মসূচি দিলেও নির্বাচন নিয়ে তাদের খুব বেশি কঠোর বার্তা নেই। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে দলটি। পুলিশের অনুমতি নিয়েই গত ৩ নভেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে ইসলামী আআন্দোলন বাংলাদেশ। সেখানে সারা দেশের নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে জড়ো হয়েছিলেন। সেখান থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করার সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত দলটির কোনো নেতাকর্মীকে মামলা বা গ্রেপ্তারের শিকার হতে হয়নি। সভা-সমাবেশে সরকারের সমালোচনা করলেও ইসলামী আন্দোলন কঠোর কোনো কর্মসূচি দেয়নি। এসব কারণে অনেকেই সন্দেহ করছে, সরকারের সঙ্গে তাদের গোপনে কোনো বোঝাপড়া হয়ে থাকতে পারে।

তবে দলের নেতাদের দাবি, কোনো সংঘাতে না গিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই তারা দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন। সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে বলেও তারা আশাবাদী।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন নির্বিঘ্নে বড় সমাবেশ করেছে। সেখান থেকে সরকারকে আলটিমেটামও দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও তাদের একজন নেতাকর্মীও গ্রেপ্তার হননি। কারও নামে মামলাও হয়নি। ফলে নির্বাচনের আগে দলটির অবস্থান নিয়ে কেউ সন্দেহ করলে তা অমূলক হবে না।

যদিও গত বুধবার ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম দলের মজলিসে আমেলার সভায় একগুঁয়েমি পরিহার করে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশকে সংঘাতের মধ্যে ফেলে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন সরকারের জন্য বুমেরাং হবে।’

তিনি নির্বাচন কমিশনকে একতরফা নির্বাচনের পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিলেরও দাবি জানান।

জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার যে, জাতীয় সরকার বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আমরা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। নির্বাচনের পরিবেশ কেমন আছে সেটি সিইসি বলুক আর কেউ বলুক তাতে কিছু যায় আসে না। নির্বাচন নিয়ে আমরা সরকারের মুখ থেকে বক্তব্য শুনতে চাই।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমাবেশ নির্বিঘ্ন হয়েছে বলেই কী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উঠছে? আমাদের মহাসমাবেশ যে নির্বিঘ্নে হয়েছে তা বলার সুযোগ নেই। অনেক জায়গা থেকে বাস আসতে বাধা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফেরত পাঠিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীও তো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে। তাহলে কী সরকারের সঙ্গে তাদের আঁতাত হয়েছে? বিএনপিও তো অনুমতি পেয়ে সমাবেশ করেছে। তাহলে কি বলবেন?’

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা ভেতরে-বাইরে দুই জায়গায় আছি। এটি সব রাজনৈতিক দলের থাকে। সুতরাং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি আলাদা নিতে হবে এমন কোনো বিষয় নয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter