আম্পায়ার যখন দিনের তৃতীয় সেশনের পানি পানের বিরতির সংকেত দিলেন, জয়ের সমীকরণ মেলাতে ইংল্যান্ডের তখন মোটে ১৬ রান দরকার। হাতে ৫ উইকেট। কিন্তু সমীকরণ মেলাতে বেশি সময় নিলেন না জেমি স্মিথ।
ড্রিংকসের পর রবীন্দ্র জাদেজার করা প্রথম ওভারের প্রথম ৫ ডেলিভারিতে এক চার এক ছক্কা আর এক ডাবলে ১২ রান তোলেন ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। জয় থেকে ৪ রান দূরে ইংল্যান্ড। ওভারের শেষ বলে লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে সে সমীকরণটা মিলিয়ে দেন স্মিথ।
তাতে হেডিংলিতে ইংল্যান্ড পেয়ে যায় ৫ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়। সেটাও আবার নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে।
হেডিংলিতে প্রথম ইনিংসে ভারত ৪৭১ রান করার পর ইংল্যান্ড আটকে গিয়েছিল ৪৬৫ রানে। ৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ৩৬৪ রান করলে ইংলিশদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭১ রান। এর মধ্যে চতুর্থ দিনের শেষ ভাগে বিনা উইকেটে ২১ রান তুলে দিন শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। আর গতকাল টেস্টের শেষ দিনে ৫ উইকেট আর ১৪ ওভার হাতে রেখে বাকি থাকা ৩৫০ রানের সমীকরণ মিলিয়ে মাঠ ছাড়ে বেন স্টোকসরা।
টেস্টে ইংল্যান্ড এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জিততে পেরেছিল মোটে একবার। তিন বছর আগে এজবাস্টনে সেটাও ছিল ভারতের বিপক্ষেই। ২০২২ সালের সে ম্যাচে ভারতের ৩৭৮ তাড়া করে জিতেছিল ইংলিশরা।
গতকাল হেডিংলিতে যেন এজবাস্টনই ফিরিয়ে আনল ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শিষ্যরা। তাতে টেস্টের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড দেখা গেছে। দুই ইনিংসে ভারত মোট ৫টি সেঞ্চুরি পেয়েছে। টেস্টে এই প্রথম ৫ সেঞ্চুরি করার পরেও হেরে গেল কোনো দল।
ভারতকে এমন পরাজয় উপহার দিতে শেষ দিনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন বেন ডাকেট। ৩৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার জ্যাক ক্রোলিকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই ১৮৮ রান তোলেন ডাকেট। ক্রোলি ৬৫ রান করে ফিরে গেলেও সেঞ্চুরি আদায় করেছেন ডাকেট।
তিনে নামা ওলি পোপ অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দলকে ২০৬ রানে রেখে ৮ রান করেই বিদায় প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। এরপর জো রুটকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন ডাকেট। ইনিংসের ৫৫তম ওভারে পর পর দুই বলে ডাকেট (১১৪৯) ও হ্যারি ব্রুককে (০) ফিরিয়ে একপেশে দিনে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন শার্দুল ঠাকুর।
তবে সে উত্তেজনায় জল ঢালেন জো রুট। বেন স্টোকসকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৪৯ রান তুলে ইংল্যান্ডের রান ৩০০ পার করেন রুট। জয় থেকে ৬৯ রান দূরে থাকতে জাদেজার বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৩৩ রান করা স্টোকস। জেমি স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটা সেরে মাঠ ছাড়েন জো রুট। শেষ পর্যন্ত রুট ৫৩ রানে ও স্মিথ ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
 
                 
                                                                                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                