সহযাত্রী অনলাইন ডেস্ক: ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় বসে ইউটিউবে একটি ইংরেজি সিনেমা দেখছিলেন মাহাবুব হাবিব। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। পড়াশোনা ফাকে বিনোদন বলতে তিনি নিজের কম্পিউটারে ইউটিউবে সিনেমা দেখেন। এই ইউটিউবেই নতুন নতুন সিনেমার ট্রেলার দেখা সিলেক্ট করেন কোন কোন সিনেমা দেখবেন। তবে সিনেমা হলে যেয়ে সিনেমা দেখাটা তার হয়ে উঠে না। কিন্তু কেন?
দল বেধে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে হলে যেয়ে সিনেমা দেখা একটা সময় ছিল উৎসবের মত। এছাড়া টিভিতে নাটক দেখা বা মঞ্চ নাটক দেখার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম কি এই গতানুগতিক মাধ্যমে বিনোদনের যথেষ্ট খোরাক পাচ্ছে না?
সামিউল আলম বলছিলেন বিনোদন বলতে এখন ফেসবুকে সময় কাটে বেশি।
তার সাথে থাকা আরেক বন্ধু বলছিলেন “হোয়াটসঅ্যাপ সবার সাথে যোগাযোগ করি এটাই আমার কাছে বেশি ভালো লাগে”।
অনেকে আবার হলে না যেয়ে ইউটিউবে সিনেমা দেখে বেশি মজা পান
পড়াশোনা ও বন্ধুদের সাথে আড্ডার পর বিনোদন বলতে যেটা বোঝায় সেটা বেশির ভাগই তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশিরভাগই প্রযুক্তি কেন্দ্রিক। হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় কাটানো, কম্পিউটার বা মোবাইলে গেমস খেলা নতুবা ইউটিউবে সিনেমা গান দেখা।
নিজের মত সময় সুযোগ পছন্দ মত বিনোদন পাওয়ার এই সুযোগ কি তরুণদের মানসিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে? মনোবিজ্ঞানী মোহিত কামাল বলছিলেন তরুণদের মধ্যে শহরে এবং গ্রামের তরুণরা রয়েছে। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে তারা কম বেশি সবাই প্রযুক্তি নির্ভর বিনোদনের প্রতি ঝুঁকছে। ফলে তারা একসময় মানসিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
তিনি বলছিলেন, এক সময় বিনোদনের জন্য পাড়া মহল্লায় প্রতিযোগিতামূলক খেলার আয়োজন করা হত, পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরিও ছিল, কিন্তু তরুণদের কাছে এসব কিছুর জায়গা দখল করেছে এখন সোস্যাল মিডিয়া।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন এই প্রযুক্তি নির্ভর বিনোদনের কল্যাণে তারা বিশ্বকে জানতে পারছে- হয়ত কিছু অর্জন করতে পারছে। কিন্তু তুলনামূলক বিচারে প্রচলিত ধারার বিনোদন মাধ্যমের বাইরে থাকার কারণে এখান থেকেই এসব তরুণরা আত্মবিশ্বাসী না হয়ে বাস্তবিক বাছ বিচার ছাড়াই অন্যের প্রতি সহজেই প্রভাবিত হচ্ছে।
-বিবিসি বাংলা