সহযাত্রী ডেস্ক: ভারতে বাংলাদেশ মিশনে বর্বরোচিত হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে জরুরি তলব করা হয়েছিল দেশটির ঢাকাস্থ হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে। আজ মঙ্গলবার বিকালে যথাসময়ে সেগুনবাগিচায় তিনি উপস্থিত হন, সরকারের প্রতিনিধিদের কথা শুনেন।
ঢাকার পক্ষ থেকে ত্রিপুরার রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে আগরতলাস্থ সহকারী হাই কমিশনে জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে অন্তবর্তীকালীন সরকার। মন্ত্রণালয় থেকে ফেরার পথে তলবের মতো কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় দূত সম্প্রীতির বার্তা দেন। উপস্থিত গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে হাই কমিশনার ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুমাত্রিক, সিঙ্গেল এজেন্ডা অথবা একটি মাত্র ঘটনা এই সম্পর্ককে আটকাবে না। বাংলাদেশ ও ভারত নানা কারণে একে অন্যের প্রতি নির্ভরশীল জানিয়ে তিনি আশা করেন- ঘটনা যাই হোক, সম্পর্ক অটুট থাকবে।
অপরদিকে, সেগুনবাগিচায় ভারতীয় দূতের উপস্থিতির আগে থেকে বিদায় অবধি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। কারণ পররাষ্ট্র ভবনের অদূরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের গেটে তখন ভারত বিরোধী বিক্ষোভ চলছিলো। সেখান থেকে কোন অতিউৎসাহী যেন কোন অবস্থাতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা ভারতীয় দূতের আশপাশে আসতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে সেনা টহলসহ পুলিশের বাড়তি সতর্কতা ছিল। সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও মোতায়েন ছিলেন গোটা সেগুনবাগিচা এলাকায়।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠান। তলব শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে আমরা একটি গঠনমূলক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক চাই। আমাদের সম্পর্কে আলোচনার অনেক বিষয় রয়েছে। অনেক বিষয়ে আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। পারস্পরিক ওই নির্ভরশীলতাকে আমরা উভয়ের স্বার্থে কাজে লাগাতে চাই। আমরা আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখব, যাতে আমাদের দুই দেশই উপকৃত হয়। এখানে অনেক ইতিবাচক অগ্রগতিও রয়েছে। ঘটনার পর থেকে ভারতে বাংলাদেশের মিশনসমূহে নিরাপত্তা বাড়ানো ছাড়াও আগরতলায় ৭ হামলাকারী আটক এবং কর্তব্যে অবহেলার জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের ৩ পুলিশ বরখাস্ত এবং একজনকে বদলি করা হয় বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে,সোমবার ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা উগ্রপন্থি বিক্ষোভকারী হামলা করে। তারা সেখানে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নজিরবিহীন ওই হামলার পর প্রতিবাদে দল-মত, জাতি-ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ফুঁসে উঠেছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে ঘটনার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে।