দৈনিক সহযাত্রী

পঙ্কজের আসনে শাম্মী: উত্তপ্ত বরিশাল-৪

সহযাত্রী বরিশাল ডেস্ক: বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসন থেকে এবার দলটির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন, তা অনেকেই নিশ্চিত ছিলেন। দলের কর্মীরা বলছেন, দলের সব পদ হারিয়ে পঙ্কজ নাথ এখন কোণঠাসা। এ অবস্থায় শাম্মীর পাল্লা অনেকে ভারী মনে করছেন।

দলের কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আহম্মেদ কয়েক মাস ধরেই হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জে নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়, গণসংযোগ, জনসভাসহ নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। দুটি উপজেলা ও একটি থানা কমিটির সব নেতা-কর্মী তাঁর পক্ষে এককাট্টা হয়েছেন। তাঁরা বর্তমান সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথকে এবার দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।

দলের নেতা-কর্মীরা বলেন, ১৬ অক্টোবর বিকেলে হিজলার কাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শাম্মী আহম্মেদ। সেখানে হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ এবং কাজীরহাট থানার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা সংসদ সদস্য পঙ্কজের নানা সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ১০ বছরে এলাকায় পঙ্কজ নাথ দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করেছেন। তবে সেখানে উপস্থিত থাকলেও শাম্মী এ বিষয়ে কিছু বলেননি।

এ কর্মী সমাবেশের দুই দিন পর পঙ্কজ নাথ মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া ইউনিয়নে সড়কসহ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাম্মী আহম্মেদের বাবা প্রয়াত মহিউদ্দীন আহম্মেদকে নিয়ে কথা বলেন। মহিউদ্দীন আহম্মেদ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। ওই সময় পঙ্কজ নাথ বলেছিলেন, এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মহিউদ্দীন আহম্মেদের সহযোগীরা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেন। এখন তাঁরাই মেহেন্দীগঞ্জে আওয়ামী লীগ করছেন।

শাম্মী আহম্মেদের পক্ষের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান বলেন, ‘শাম্মী আহম্মেদ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আমরা আশাবাদী তিনি মনোনয়ন পাবেন। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের দাবি এটা। এলাকায় দল ও জনগণ এখন আর তাঁকে (পঙ্কজ নাথ) চায় না।’

কামাল খান আরও বলেন, দলের সব পদ হারিয়ে এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পঙ্কজ নাথ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এখন দিকশূন্য হয়ে পড়েছেন। নানা বেফাঁস মন্তব্য করছেন। পঙ্কজ গত ১০ বছরে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্মম অত্যাচার করেছেন। দুটি উপজেলা ও আটটি ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থীদের পরাজিত করিয়েছেন। গত ১০ বছরে তাঁর অন্যায়-অত্যাচারে অন্তত ১১ জন খুন হয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরা এর থেকে মুক্তি চান।

তবে পঙ্কজ নাথ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সুভাষ চন্দ্র সরকার। তাঁর দাবি, দলীয় কিছু নেতা-কর্মীরা সংসদ সদস্যের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় বিরোধিতা করছেন। তবে এলাকার জনসমর্থন পঙ্কজ নাথের পক্ষে। দলীয় মনোনয়ন পেলে এবারও তিনি বিজয়ী হবেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter