সহযাত্রী ডেস্ক: গ্রামীণ শিল্প ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন শীতলপাটি। সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পটি এখন হারানোর পথে। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়নের শীতলপাটির গ্রাম নামে পরিচিত চাঁদপুরেও বিলুপ্তপ্রায় এ শিল্প।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গ্রামটির বেশিরভাগ মানুষই সনাতন ধর্মাবলম্বীর। এক সময় গ্রামের ২০০ পরিবারের প্রায় ৮০০ নারী-পুরুষ এ শীতল পাটি শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও প্লাস্টিকের পণ্যের দাপটে আজ তা অতীত। উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে হলেও এই গ্রাম থকেই এক সময় জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতলপাটি বাজারজাত করা হতো।
চাঁদপুর গ্রামের শ্রী ধনাঞ্জয় কুমার বলেন, আমার পূর্বপুরুষরা স্বাধীনতার পর থেকেই শীতলপাটি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল। সেই সুবাদে শীতল পাটি বুনিয়ে ও বিক্রি করে আমাদের সংসার চলে। তবে বর্তমানে প্রত্যেক বাজারে প্লাস্টিকের পাটি ও পলিথিনের কাগজসহ নানা প্লাস্টিক পণ্যের কারণে এ শিল্পের আর কদর নেই।
শীতলপাটির কারিগর অনিতা রানী, রাত্রী ও বৃষ্টি বলেন, শীতলপাটির আর কদর নেই। অভাবের সংসার চালানোর জন্য অন্য পেশা না পেয়ে অল্প মজুরিতেই এ কাজ করি।
ঝাঐল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ঠান্ডু বলেন, এ শিল্পের সঙ্গে এখন যারা জড়িত তারা ভালো নেই। এক সময় শীতলপাটির যে পরিমাণ চাহিদা ছিল তা আজ নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, ঐতিহ্যের এ শিল্পকে ধরে রাখার জন্য কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করেছিলাম। কুটির শিল্প মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিল্পটিকে ধরে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা সুলতানা বলেন, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সময় ওইসব কারিগরদের সহযোগিতা করা হয়। তবে বর্তমান বাজারে শীতল পাটির তেমন চাহিদা না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।