দৈনিক সহযাত্রী

আমি ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছি- প্রধানমন্ত্রী

সহযাত্রী ডেস্ক: সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীদের দেশ ও মানুষের কথা ভাবতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকার গঠনের পর ব্যবসায়ীরা, সে যে দলেরই হোক না কেন, যাতে ব্যবসাটা ব্যবসায়ী হিসেবে করতে পারে সেই পরিবেশটা আমি সৃষ্টি করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের মুনাফার আগে দেশ ও মানুষের কথা ভাবতে বলেছেন।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোগ্যপণ্যের আমদানি-রফতানিকারকদের সাথে বৈঠকে এসব কথা বলেন। গণভবনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রমুখ।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, টি কে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, সিটি চিনিকলের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী, সিটি এডিবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা, এস আলম গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার কাজী সালাউদ্দিন আহমেদ, দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান, মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল, এসিআই লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ দৌলা এবং আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ জসীম উদ্দিন মতবিনিময়ে অংশ নেন।

তিনি বলেন, ‘আপনার লাভের (প্রফিটের) অংশ শেয়ার করার জন্য এখানে কোনো হাওয়া ভবনও নেই, আর পিএমওতে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে) কোনো উন্নয়ন উইংও নেই। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে বিনা বাধায় মুনাফা করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উন্নয়ন শাখার ‘যন্ত্রণা’ ও ‘হাওয়া ভবন’ থেকে মুক্ত। ‘এখন আপনাদের এই যন্ত্রণায় ভুগতে হচ্ছে না। আপনাদের এটি স্বীকার করতে হবে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে লাভের সিংহভাগই হাওয়া ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন উইংয়ে গেছে।

তিনি বলেন, মনে রাখুন এবং দেশ এবং এর জনগণের কথা চিন্তা করুন।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার ব্যবসায়ীদের তাদের ব্যবসা সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছেন, যদিও তারা এটা চায়নি। তিনি বলেন, তার উদ্যোগের মাধ্যমে একটি দল গঠন করা হয়েছিল এবং এটি অর্থনীতির চাকা চালানোর জন্য ভালোভাবে কাজ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মহামারির সময়ে উন্নত দেশের অনেক কলকারখানা ও শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম আমাদের কারখানা এবং শিল্পগুলো বন্ধ হতে দেব না, আমাদের চালিয়ে যেতে হবে… আমি শ্রমিকদের মজুরি নিশ্চিত করেছি, প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি।

বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়কালের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে কোনও হাওয়া ভবনও নেই, আর পিএমওতে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে) কোনও উন্নয়ন উইংও নেই। হাওয়া ভবনে একভাগ দিতে হবে, উন্নয়ন ভবনে একভাগ দিতে হবে বা অমুক জায়গায় দিতে হবে এই যন্ত্রণায় আপনাদের ভুগতে হয় না এখন। এটা তো আপনারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন, সেই যন্ত্রণা থেকে সবাই মুক্ত আছেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই ১৪ বছর একটানা ধারাবাহিকভাবে আপনারা লাভজনক ব্যবসা করে গেছেন। আমরা কিন্তু করোনার সময়ও মোকাবিলা করলাম। প্রণোদনা দিলাম, বিশেষ প্রণোদনা। আমার কাছে কেউ এসে দাবি করেনি, কেউ বলেনি। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার একটা টিম খুব ভালো কাজ করছিল যে কোথায় কী করা যেতে পারে, অর্থনীতির চাকাটা চলমান রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ, তাদের সমস্ত কর্মকা- বন্ধ, সবকিছু। আমরা বলেছি, এখানে বন্ধ হতে দেবো না। এখানে চালু রাখতে হবে। শ্রমিকদের বেতন, এই যে গার্মেন্টস, তার বেতন তো আমি দিয়ে দিলাম সব। প্রণোদনা প্যাকেজ করলাম, বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter