দৈনিক সহযাত্রী

ডিসেম্বরে মানুষের ঢল আর জনস্রোত কাকে বলে, তা দেখাবে আওয়ামী লীগ- ওবায়দুল কাদের

সহযাত্রী অনলাইন ডেস্ক: বুধবার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের খিলগাঁও থানা এবং ১, ২, ৩ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দু-তিনটা সমাবেশ করে ফখরুলের ভাবখানা এমন যে, ক্ষমতায় এসেই গেছে। এত সোজা না…এত সোজা না, খেলা হবে। খেলা হবে। রাজপথে খেলা হবে। আন্দোলনে খেলা হবে। ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসে খেলা হবে। আগামী নির্বাচনে খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাটের বিরুদ্ধে, ভোটচুরির বিরুদ্ধে, ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে খেলা হবে।’

দু-তিনটি সমাবেশ করে কিছু লোক সমাগম করে বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ডিসেম্বরে মানুষের ঢল আর জনস্রোত কাকে বলে, তা দেখাবে আওয়ামী লীগ।’

তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, কোথায় আছেন- আসুন একটু খিলগাঁও। এক দিন আগে জনসভা করেছেন, এর তিন ভাগের এক ভাগ লোকও হয়নি।কথায় কথায় শুধু ঢল নামে। জনস্রোত তো এখনো দেখেননি। ডিসেম্বরে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাবেন। একটু অপেক্ষা করুন। লোকের ঢল কাকে বলে দেখবেন।’

এ সময় বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘ভুত’ মাথা থেকে নামানোর পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই ভুত বাংলার মানুষ নিষিদ্ধ করেছে। উচ্চ আদালত নিষিদ্ধ করেছে। আর তত্ত্বাবধায়ক চিন্তা করে লাভ নেই। ফখরুল ক্ষমতার রঙিন খোয়াব দেখছেন। এখনো দেখেননি কত ধানে কত চাল। সময় আসছে বুঝিয়ে দেব।’

রিজার্ভ নিয়ে বিএনপির মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তারা কোন মুখে রিজার্ভের কথা বলে। রিজার্ভ আমরা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছি। এখন বৈশ্বিক সংকটের কারণে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। বিএনপির রিজার্ভ কত ছিল? বিএনপির সময়ে ৪.৮ অর্থাৎ ৫ বিলিয়নও ছিল না।’

বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি সমালোচনারও জবাব দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে হায়রে কাণ্ড। দৌড় রে দৌড়। বেশি দূরে নয়। শনিরআখড়ার দৌড়। ভুলে গেছেন? ফখরুল সাহেব শনিরআখড়ায় পাবলিকে দৌড়ায়। পাবলিকে দৌড় দেয়।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে ফখরুল বড় বড় কথা বলে। এই বৈশ্বিক সংকটের আগে দেশে কোনো বিদ্যুতের অভাব ছিল না। গ্যাসের অভাব ছিল না। অথচ বিএনপি সময়ে বিদ্যুতের বদলে শুধু খাম্বা ছিল।’

বিএনপিকে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসতে বিভিন্ন দেশের দারস্থ হয়। আমরা এই রাজনীতি করি না। জনগণ ভোট দিলে আমরা ক্ষমতায় থাকব, না দিলে থাকব না।’

গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর মতিঝিলে একটি জাতীয় দৈনিকের কার্যালয়ে পত্রিকাটির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক কমিশন করবে উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সংবিধান অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।’

সংবিধানের কোনো পরিবর্তন হবে না জানিয়ে দিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন সংবিধান পরিবর্তন করবে। ডিসেম্বরে বুঝিয়ে দেব সংবিধান পরিবর্তনের দুঃসাহস কী করে হলো। মাথা থেকে নামাতে হবে। এই পবিত্র সংবিধান লাখো শহিদের রক্তে মাখা…অনেক কচুকাটা করেছেন। সংবিধানকে আর বাংলার জনগণ কচুকাটা করতে দেবে না।’

বিএনপি লন্ডনের রিমোট কন্ট্রোলে চলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওখান থেকে ফরমায়েশ করে আর এখানে ফখরুল নাচে। যেমনি নাচায় তেমনি নাচে। পুতুলের মতো। পুতুলের কী দোষ। ফখরুল সাহেব নাচানাচি করছেন আন্দোলনের নেতা কে? নির্বাচনের নেতা কে? দণ্ডিত আসামি যে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবে না বলে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে ২০০৮ সালে। এই নেতাকে কি মেনে নেবে বাংলাদেশের জনগণ? শেখ হাসিনার মতো যোগ্যতা, সততা, দক্ষতা আর কারো আছে এদেশে?’

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter