দৈনিক সহযাত্রী

শিরোনাম

হৃদরোগের কারণ ও ভালো থাকার কিছু উপায়

সহযাত্রী অনলাইন ডেস্ক: আচমকা হৃদযন্ত্রের গোলোযোগ ধরা পড়লে জীবনটা এলোমেলো হয়ে যায়৷ অথচ এমন অবস্থার পূ্র্বাভাস কিন্তু আগেই পাওয়া যেতে পারে এবং হৃদরোগের লক্ষণ আগেভাগে জানলে বা সচেতন হলেই কিন্তু ভাল থাকা যায়।

হৃদরোগ বলতে সাধারনভাবে হৃৎপিন্ড, রক্তবাহী ধমনী ও শিরা, মস্তিষ্ক ও বৃক্ক সম্পর্কিত রোগকে বোঝায়। হৃদরোগের অনেক কারণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রধান। বয়সের সঙ্গে হৃৎপিন্ড ও ধমনীর গঠনগত পরিবর্তনও হৃদরোগের জন্য অনেকাংশে দায়ী। হৃদরোগ সাধারনত বয়স্কদেরই হয়। মহিলাদের চেয়ে পুরুষরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

হৃদরোগ বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন- জন্মগত হৃদরোগ, করোনারি হৃদরোগ, হার্ট ফেইলর, কার্ডিওমায়োপ্যাথি, উচ্চ রক্তচাপ জনিত হৃদরোগ, কোর পালমোনাল (হৃৎপিণ্ডের ডান পাশ অচল হয়ে যায় এবং শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়), সেরেব্রোভাস্কুলার রোগ (মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী রক্তবাহিকার অসুখ, যেমন- স্ট্রোক), প্রান্তিক ধমনীর রোগ, রিউম্যাটিক হৃদরোগ (বাতজ্বরের কারণে হৃদপেশি ও ভাল্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া), কার্ডিয়াক ডিসরিদ্মিয়াস ইত্যাদি।

আসুন জেনেনি হৃদ রোগের ১০ কারণ :

– বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

– মহিলাদের চেয়ে পুরুষেরা হৃদরোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে মেনোপজের পরে মহিলাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

– অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

– বাবা-মায়ের হৃদরোগ থাকলে তাদের সন্তানদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অধিক থাকে। এর মূল কারণ পরিবারের একই খাদ্যাভ্যাস ও ধূমপানের অভ্যাস।

– উচ্চ রক্তচাপ করোনারি হৃদরোগের একটি মারাত্মক রিস্ক ফ্যাক্টর। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিন্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

– রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার আধিক্য হৃদরোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টর।

– হৃদরোগ হওয়ার পেছনে ডায়াবেটিসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

– অধিক ওজন হলে শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে হৃদপিণ্ডের অধিক কাজ করতে হয়। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

– শারীরিকভবে নিস্ক্রিয় লোকদের হৃদরোগ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। অলস জীবন-যাপন করোনারি হৃদরোগের জন্য আরেকটি রিস্ক ফ্যাক্টর।

– হৃদরোগ হওয়ার পেছনে ধূমপানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ব্যক্তি নিয়মিত ধূমপান করে থাকেন তার হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার ঝুঁকি থাকে।

সুস্থ থাকার উপায় :

হৃদরোগ অনেকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিরোধযোগ্য। হৃদরোগ চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ সহজ। এ জন্য দরকার রোগ সম্পর্কে ধারণা এবং প্রতিরোধের ইচ্ছা।

করোনারী হৃদরোগের কারণ সঠিক জানা যায়নি। তবে রক্তে চর্বির আধিক্য, ধূমপান, হাইপারটেনশন এবং ডায়াবেটিকস করোনারী ডিজিজ (হার্ট এ্যাটাক) এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং এগুলো প্রধান ঝুঁকি বা রিসক ফ্যাক্টর। এগুলো যে শুধু হার্ট এ্যাটাকই করে তাই নয়, শরীরের যে কোনো রক্ত নালীতে চর্বির প্রলেপ জমিয়ে আরও ভয়াবহ রোগ সৃষ্টি করে যেমন- স্ট্রোক, পায়ের গ্যাংরিন, কিডনির রোগ ইত্যাদি। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই সমস্ত রোগের ঝুঁকিও কমানো যায়।

হৃদরোগ থেকে বাঁচতে হলে এর প্রতিকার সম্পর্কে জানা জরুরি, এবার জেনে নিন, কী করে হৃদরোগের প্রতিকার করা সম্ভব বা সুস্থ থাকার উপায়।

– হৃদরোগের শত্রু হচ্ছে ধূমপান। তাই ধূমপান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।

– ধূমপানের মতো মাদকও হৃদরোগের আরেকটি কারণ, তাই মাদককে না বলুন।

– অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না। নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। ভালো থাকবেন।

– মাঝে মাঝে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন।

– ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। নিয়মিত হাঁটা-চলা ও ব্যায়াম করে নিজেকে সুস্থ রাখুন।

– প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খান।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter