দৈনিক সহযাত্রী

শিরোনাম

দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনার দায় স্বীকার করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন- বিএনপি

সহযাত্রী ডেস্ক: সর্বত্র সীমাহীন দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অব্যবস্থাপনার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে এ দাবি জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়, জ্বালানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ, জ্বালানি উপদেষ্টার অসহায় মন্তব্য, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষমতাসীনরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।

গত সোমবার রাত ৮ টায় অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সভায় সিত্রাং নামক ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকায় প্রাণহানি ও অসংখ্য বাড়ি-ঘর ধ্বংস, মৎস্য খামার ও ফসল বিনষ্ট হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। সভায় খুলনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পদে পদে বাধা, হামলা, পুলিশের গ্রেফতারকে উপেক্ষা করে সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার জন্য খুলনা বিভাগের বীর জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। ২দিন পূর্বে সরকারি যোগসাজসে স্থলপথ ও জলপথ পরিবহণ ধর্মঘট আহ্বানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। কোনও বাস, ট্রাক, থ্রি হুইলার, লঞ্চ, নৌকা চলাচল করতে না দেয়ার পরেও কর্মসূচীর আগের রাতেই সভাস্থলে সাহসী জনগণের অবস্থান এবং পরের দিন জনতার ঢলে পুরো খুলনা শহরে জনতার উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টির জন্য খুলনা মহানগরসহ সকল জেলা, পৌরসভায় দলের এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতা-র্কর্মীদের ও জনসাধারণকে অভিনন্দন জানানো হয়। খুলনার সমাবেশ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করা হয়। সভায় সংবিধান সম্মত সমাবেশে সন্ত্রাসী হামলা, পূর্বের দিন এবং সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের সমাবেশ পন্ড করার হীন প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সভায়, জ্বালানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ, জ্বালানির উপদেষ্টার অসহায় মন্তব্যের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে সীমাহীন দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের মদদপুষ্ট গুটিকতক কোম্পানীকে সকল সুবিধা প্রদান, ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন, দেশে গ্যাস উত্তোলনে অনীহা, স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি ক্রয় এবং সর্বোপরি অর্থ লুট করে বিদেশে পাচারের কারণে রিজার্ভ এর পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। অনির্বাচিত সরকারের কোথাও জবাবদিহিতা না থাকায় নজিরবিহীন দুর্নীতি চরম পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে। জ্বালানির উপদেষ্টার মন্তব্য বিএনপি’র কয়েকটি প্রেস কনফারেন্স ও সেমিনারের বক্তব্যকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে। জ্বালানির অপ্রাপ্যতা, বিদ্যুতের সরবরাহে চরম বিপর্যের সকল দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বাভাসে ২০২৩ সালে বিদেশী ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১১৫ বিলিয়ন ডলারে, ২০২২ সালে এই এই ঋণ পরিশোধই ব্যয় হবে ২৩ বিলিয়ন ডলার এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে, অনির্বাচিত সরকারের গৃহীত তথাকথিত মেগা প্রজেক্ট এবং প্রয়োজন নয় এমন সব প্রকল্প গ্রহণ, সুষ্ঠু কোনও পরিকল্পিত নীতি ব্যতিরেকে উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ, আন্তর্জাতিক ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে ব্যক্তিস্বার্থে ঋণ গ্রহণ অর্থনীতিতে গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে। এর দায়ভার নিয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। সভায়, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী কার্যক্রম ‘বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত নিগৃহীত মহিলা ভাতার জন্য নতুন তালিকাভুক্তি বন্ধ করায় অনির্বাচিত সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter