আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের মশা খুব কামড়ায় আবার কাউকে একদমই কামড়ায় না। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ আছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে নিউ ইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুজীববিদ্যার গবেষক লেসলি ভসহল একটি গবেষণা চালিয়েছেন।
তার গবেষণা বলছে, কিছু কিছু মানুষের চামড়ায় এমন কিছু উপাদান থাকে যা মশাকে আকৃষ্ট করে। সারা জীবনই সেই উপাদানগুলো ত্বকে পাওয়া যায়। তাই চিরকালই তাদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় মশা।
মঙ্গলবার বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা ‘সেল’-এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ৬৪ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর এ গবেষণা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, বিভিন্নভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের সাজিয়ে এডিস ইজিপ্টাই মশার সামনে নিয়ে গিয়েছেন তারা। দেখা গিয়েছে, বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তির দিকে প্রায় ১০০ গুণ বেশি আকৃষ্ট হয়েছে মশা। বেশ কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা করার পরেও একই ফলাফল পাওয়া গেছে। এই ব্যক্তিদের গবেষকেরা ‘মশক চুম্বক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
কেন ঘটে এমনটা?
গবেষকদের দাবি, যাদের মশা বেশি কামড়াচ্ছে তাদের ত্বকে কিছু বিশেষ ধরনের অ্যাসিড ক্ষরিত হয়। ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে এই অ্যাসিডগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক ভেদে বিভিন্ন মানুষের দেহে বিভিন্ন হারে এই উপাদানগুলি ক্ষরিত হয়। ত্বকে বসবাসকারী কিছু ব্যাক্টেরিয়া এই অ্যাসিড থেকে উৎপাদিত ‘পিচ্ছিল’ কণাগুলির উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। মানুষের গায়ের গন্ধও কিছুটা এই উপাদানের উপর নির্ভর করে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই উপাদানের প্রতিই আকৃষ্ট হয় মশা। যেহেতু এই অ্যাসিডগুলো ত্বকের স্বাভাবিক উপাদান, তাই জোর করে এই উপাদানগুলো দেহ থেকে দূর করতে গেলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। ফলে মশার কামড় থেকে বাঁচার উপায় নেই।
সূত্র : আনন্দবাজার